সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
বদলীর পাঁচমাস পার হতেই মন্ত্রনালয়ের অসাধু কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সাবেক উপ সহকারী প্রকৌশলী মফিজুর রহমানকে পুনরায় সাতক্ষীরায় বদলী করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছরের ২০মার্চ জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জামানুর রহমানের সাক্ষরিত এক পরিপত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। মফিজুর রহমান বর্তমানে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলায় উপ- সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত। এর আগে ঠিকাদার মো.শামছুর রহমান বকুলের কাছ থেকে গ্রাহক প্রতি১০হাজার ঘুষ দাবির অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত বছরের ২৪অক্টোবর মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মীর আবু শাহিদের সাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা থেকে কেশবপুর উপজেলায় বদলী করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মফিজুর রহমান বছর দুই আগে তালা উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। ওই সময় রেন ওয়াটার হারবেষ্ট ও গভীর নলকুপ প্রকল্পে দূনীতি করে অর্থকোটি টাকা কামিয়েছিলেন। তৎকালীন সময়ে তার এই দূনীতি নিয়ে একাধিক বার পত্রপত্রিকায় সচিত প্রতিবেদন প্রকাশিক হলে তাকে সাতক্ষীরা সদরে বদলী করে কর্তৃপক্ষ। এরপর সদর উপজেলায় এসেও জড়িয়ে পড়েন দূনীতির মহাযজ্ঞে। তার কাছে কাজ পেতে হলে গুনতে হত বিপুল অংকের অর্থ বলে অভিযোগ একাধিক ঠিকাদারের।
এই ঘটনার ভুক্তভোগী চাঁদপুর জেলার শামিম ট্রেডার্সের ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত বছরের এপ্রিল মাসে রেনওয়াটার হারবেষ্ট প্রকল্পে ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে সাড়ে ৬হাজার ট্যাংকি পান তিনি। ওই সময়ে উপ সহকারী প্রকৌশলী মফিজুর রহমান ট্যাঙ্কি প্রতি ২হাজার টাকা ঘুষ দাবী করে বসেন। দাবী মত টাকা না দেওয়ার কারনে তিন মাসের জন্য কাজ বন্ধ করে দেন উপ- প্রকৌশলী মফিজুর। এরপর বিভাগীয় কর্মকর্তা সহ স্থানীয় ঠিকাদারের মাধ্যমে ম্যানেজ করে কার্যক্রম শুরু করেন তিনি।এরপর তাকে প্রকল্পে নানা বাঁধার সমুখীন হতে হয়েছে বলে অভিযোগ তার।
শামছুর রহমান বকুল নামে আরেক ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, তিনি কয়েকটি সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওয়াস ব্লক প্রকল্পে কাজ পেয়েছিলেন।ওই সময় প্রকৌশলী মফিজুর রহমান পরিদর্শনে গিয়ে গ্রাহক প্রতি দশ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন বসেন।দাবী মত টাকা না দেওয়া তার প্রকল্পের বিলে ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে তালবাহানা শুরু করেন। উপায় না পেয়ে তিনি এই দূনীতি বাজ উপ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে তাকে কেশবপুর উপজেলা বদলী করেন।
নাম না জানানোর শর্তে সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক ঠিকাদার জানান, মফিজুর সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় থাকতে নানা ভাবে ঠিকদারদের হয়রানি করত।ঘুষ ছাড়া কোন ভাবেই তিনি ফাইল পত্র ছাড় করতেন না। দাবী মত টাকা না দিলে পড়তে হত তার রোষানালে । কয়েক মাস আগে তার কেশবপুর বদলী হলেও শুনছি তার পুনরায় সাতক্ষীরায় বদলী হয়েছে এটা খুবই দুখ:জনক। এই দূনীতিবাজ কর্মকর্তার বদলী আদেশ বাতিল সহ তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে জনস্বাস্থ্য উপ প্রকৌশলী মো.মফিজুর রহমান জানান, তিনি কোন ঘুষ দূনীতির সাথে জড়িত নন।একটি মহল তার বিরুদ্ধ ষড়যন্ত্র করছে।
বিষয়টি নিয়ে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মীর আব্দুর শাহিদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ফোনটি রিভিস করেননি।
Leave a Reply