নিজস্ব প্রতিবেদন:
গত ০৭ মে, শ্রীপুরের মাওনা বাজারস্থ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিসের সামনে অনুষ্ঠিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ হযরত আলী সাহেবের জানাজার নামাজে স্থানীয় কোনো সাংবাদিকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হতাশাজনক।
মরহুম হযরত আলী সাহেব কেবল একজন মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না, বরং তিনি একজন প্রাক্তন সেনা সদস্য হিসেবেও দেশ সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। প্রচারবিমুখ এই মানুষটির শেষ বিদায়ে উপজেলা প্রশাসন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক গার্ড অফ অনার প্রদান করা হলেও, আমাদের শ্রীপুরের ইলেকট্রনিক বা প্রিন্ট মিডিয়ার কোনো সাংবাদিক এই বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ করেননি। এমনকি স্থানীয় সাংবাদিকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই বিষয়ে কোনো পোস্ট দেখা যায়নি।
অনেকেই আজকাল ছোটখাটো ঘটনা কিংবা মুখরোচক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ প্রতিবেদন লেখেন, অথচ জাতির একজন সূর্যসন্তানের শেষ বিদায়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা তাদের দৃষ্টি এড়িয়ে গেল, যা সত্যিই বোধগম্য নয়। সংবাদ, সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকতা অবশ্যই দেশ, জাতি, রাষ্ট্রের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা। সাংবাদিকতার মাধ্যমেই জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণ এবং সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটার কথা। কিন্তু যদি সাংবাদিকতা ব্যক্তিগত স্বার্থ, খোঁচাখুঁচি, ঈর্ষা বা চাটুকারিতায় নিমজ্জিত হয়, তবে জাতি নিঃসন্দেহে তার সঠিক পথ হারাবে।
আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে হয়তো দেশে আর কোনো জীবিত মুক্তিযোদ্ধাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখনো যারা বেঁচে আছেন, তারা আমাদের অমূল্য সম্পদ এবং গবেষণার উৎস হতে পারেন। তাই যারা লিখতে জানেন এবং সমাজ নিয়ে ভাবেন, তাদের প্রতি অনুরোধ, আত্মকেন্দ্রিকতা ও স্বার্থপরতা পরিহার করে মুক্ত মনে লিখুন। নিজের প্রতিভা, সুযোগ ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখুন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ হযরত আলী সাহেবের জীবন ও কর্ম আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তাঁর এই নীরব প্রস্থান আমাদের সাংবাদিকতার দৈন্যতাকেই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেল।
Leave a Reply