তুষার আহম্মেদ কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌর এলাকার কালামপুরে সোমবার বিকেলে এক আনন্দঘন পরিবেশে ৪৬তম বার্ষিক চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে কালামপুর সর্বজনীন কেন্দ্রীয় মন্দির প্রাঙ্গণে এই ঐতিহ্যবাহী লোকউৎসবের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে মন্দির মাঠ।
অনুষ্ঠানে কালামপুর সর্বজনীন কেন্দ্রীয় মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী বাদল বর্মনের সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সহ সম্পাদক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোঃ হুমায়ুন কবির খান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী বিকাশ চন্দ্র বর্মন, পৌর ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোঃ রিয়াজুল আলম রিয়াজ, পৌর ৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ আকাশ মন্ডলসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
চড়ক পূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এক প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী লোকউৎসব। এই পূজা উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে দিনভর বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়। ভক্তরা নানা ধরনের ব্রত ও উপবাস পালন করেন এবং শিবের আরাধনা করেন।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোঃ হুমায়ুন কবির খান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। এই ধরনের ঐতিহ্যবাহী লোকউৎসবগুলি আমাদের সমাজের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে তোলে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা বহন করে।” তিনি শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন করার জন্য মন্দির কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।
মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী বাদল বর্মন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,”প্রতি বছর কালিয়াকৈরের মানুষ বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এই চড়ক পূজা উদযাপন করে। সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের অনুপ্রাণিত করে।প্রতি বছর পহেলা বৈশাখের প্রাক্কালে কালিয়াকৈরে এই চড়ক পূজা অত্যন্ত আনন্দ ও উদ্দীপনার সাথে উদযাপিত হয়ে আসছে, যা এই অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই পূজা শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মিলনমেলাই নয়, এটি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণে এক সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়।
Leave a Reply