নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৃষ্টি উপেক্ষা করে মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস মোগরখাল পুনরুদ্ধার ও খনন কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। এসময় তিনি খালটির কোল ঘেষে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ কাঁদামাটির পথ পায়ে হেঁটে ঘুরে ঘুরে কাজের মান যাচাই করেন।
শুক্রবার (৩০ মে) সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস থেকে মোগর খাল পুনরুদ্ধার ও খনন কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন শুরু করেন। তিনি মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত দীর্ঘ পথ হেটে কাজ দেখেন। এসময় তিনি বৃষ্টির কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পানি জমে জলাবদ্ধতার কারণ ও প্রতিকার জানার চেষ্টা করেন। এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের সচিব আমিন আল পারভেজ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আনিক-৫ মোঃ ফিরোজ আল মামুন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আনিক-৬ মাহমুদা আক্তার, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ, নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী রকিবুল হাসান রাসেল, নির্বাহী প্রকৌশলী মাইদুল ইসলাম, উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আমজাদ হোসেন,সহ সিটি কর্পোরেশনের নেতৃবৃন্দ ও বিএমটিএফ হতে প্রদানকৃত লং বুম এস্কাভেটর -(৭৫ফুট) দ্বারা এস্কাভেশন করা হচ্ছে যা নিয়মিত চলবে।
পরিদর্শনের সময় প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, সিটি কর্পোরেশনের তরফ থেকে নগরীর বেশকিছু খাল ও বক্স কালভার্ট থেকে বর্জ্য অপসারণের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে খাল পুনরুদ্ধার অভিযানে পরিপূর্ণভাবে সফলতা পেতে হলে সকলের সর্বোচ্চ সদিচ্ছাও প্রয়োজন। আশা করা যায়, আমাদের খাল খনন কাজগুলো সম্পন্ন হলে এই খালের আশেপাশের মানুষের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা ও নানা রকম দূষণের কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগ লাগব হবে।
তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রাথমিকভাবে খাল থেকে ময়লা অপসারণ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে খালের বিভিন্ন অংশে ভেকু (খননযন্ত্র) পৌঁছানো কঠিন হওয়ায় কিছু জায়গায় খননকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এরপর পর্যায়ক্রমে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খালের প্রস্থ বৃদ্ধি করে স্থায়ী সম্প্রসারণ কাজ শুরু হবে।
বাইপাস হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের চান্দনা চৌরাস্তা উল্কা সিনেমা হল পর্যন্ত দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা ঘুরে দেখে প্রশাসক অভিযোগ করেন, বিআরটি প্রকল্পে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ নকশা ও ভুল বাস্তবায়ন এই সমস্যার অন্যতম কারণ। তিনি জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশন নিজস্ব উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রশাসক আরও বলেন, আমাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে পানির চ্যানেলটা ওপেন করে দেওয়া। একটু বৃষ্টি হলেই চৌরাস্তায় ও ভোগরা এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এই খাল শুধু একটি পানি চলাচলের পথ নয়, এটি নগরবাসীর ভবিষ্যতের নিরাপত্তা, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য রক্ষার অন্যতম মাধ্যম। আমরা পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখেছি, খালের মধ্যে পলিথিন, লেপ, তোশক, বালিশ, এমনকি গৃহস্থালী সামগ্রীর স্তূপ পাওয়া যাচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে। এসময় তিনি নগরবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানান, আপনারা যদি সচেতন থাকেন, খালের পাশে ময়লা না ফেলেন এবং আমাদের পাশে থাকেন, তবে গাজীপুর একদিন পরিচ্ছন্ন, বাসযোগ্য ও আধুনিক নগরীতে পরিণত হবেই।
Leave a Reply