লেখক মোঃ সাজজাকুল ইসলাম রাজ্জাক
বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি একটি ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও কৃষিনির্ভর প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এটি মূলত মুঘল শাসনামলে একটি প্রশাসনিক প্রয়োজন থেকে শুরু হলেও, ধীরে ধীরে বাঙালি সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ উৎসবে পরিণত হয়েছে।
বাংলা নববর্ষের উৎপত্তির পেছনের মূল বিষয়গুলো:
—
১. আকবরের আমলে প্রবর্তন (১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দ):
মুঘল সম্রাট আকবরের সময় কৃষিভিত্তিক কর আদায়ের সুবিধার জন্য একটি নতুন পঞ্জিকা প্রবর্তনের প্রয়োজন হয়। হিজরি চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী কর আদায়ে সমস্যার কারণে বাংলা সৌরবর্ষের ভিত্তিতে একটি বর্ষপঞ্জি তৈরি করা হয়, যার নাম হয় ফসলি সন। এই সন হিসেবেই বাংলা বছরের গোড়াপত্তন ঘটে।
—
২. সূর্যসিদ্ধান্ত ও সংস্কার:
হিন্দু সৌর পঞ্জিকা তথা সূর্যসিদ্ধান্ত অনুসারে বাংলা মাস ও বছর নির্ধারিত হতো। আকবরের আমলে এই সৌর পঞ্জিকাকে ইসলামী হিজরি সনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুনভাবে সংস্কার করে বাংলা সনের জন্ম দেওয়া হয়।
—
৩. কৃষিভিত্তিক সমাজে প্রভাব:
বাংলা নববর্ষের সূচনা হয় চৈত্র সংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখ-এর মধ্য দিয়ে। এই সময় কৃষকেরা ফসল ঘরে তোলে এবং পুরনো দেনা মিটিয়ে নতুন হিসাব শুরু করে। ফলে বাংলা নববর্ষ ছিল কর আদায়ের পাশাপাশি কৃষিজীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
—
৪. সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা:
ধীরে ধীরে বাংলা নববর্ষ শুধুমাত্র কর আদায়ের বিষয় না থেকে একটি সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত হয়। বিশেষ করে হালখাতা, মেলা, পান্তা-ইলিশ, আলপনা, পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা ইত্যাদি এ উৎসবকে জীবন্ত করে তোলে।
—
পেঁচার সাৎে বাঙ্গালির সম্পর্ক
পেঁচার সাথে নববর্ষের সম্পর্ক মূলত বাঙালি লোকসংস্কৃতি, পৌরাণিক কাহিনি এবং হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতির সঙ্গে যুক্ত। এখানে কিছু দিক তুলে ধরা হলো:
১. লক্ষ্মী দেবীর বাহন হিসেবে পেঁচা
হিন্দু ধর্ম মতে, পেঁচা হল দেবী লক্ষ্মীর বাহন। নববর্ষ বা বাংলা নববর্ষে ব্যবসায়ীরা “হালখাতা” করেন, যেখানে তারা দেবী লক্ষ্মীর পূজা করে নতুন বছরের মঙ্গল কামনা করেন। এই উপলক্ষে পেঁচার ছবি বা প্রতীক অনেক সময় ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি লক্ষ্মীর সঙ্গে সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের প্রতীক।
২. লোকবিশ্বাস ও রূপক অর্থে
পেঁচা সাধারণত রাতে সক্রিয় থাকে, তাই অনেক সময় এটিকে “রহস্যময় জ্ঞান” ও “দৃষ্টিশক্তি”-র প্রতীক হিসেবেও দেখা হয়। বাংলা নববর্ষে নতুন সূচনার
Leave a Reply